গ্রীনল্যান্ড

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রীনল্যান্ড এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে, ডেনমার্কের কাছাকাছি অবস্থিত একটি দেশ। আর্কটিক এবং আটলান্টিক মহাসাগরের সীমানায় অবস্থিত গ্রীনল্যান্ডের প্রায় 80% স্থায়ী বরফ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। বিশাল বিশাল আইসবার্গ নিয়মিত এই দ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়। গ্রীনল্যান্ডের অভ্যন্তরে বরফের স্তরের পুরুত্ব 3 কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। প্রধানত দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে কিছু সংখ্যক জনগণ বসবাস করে, যা দেশটির সবচেয়ে উষ্ণ এলাকা। এমনকি গ্রীষ্মকালেও এখানকার গড় তাপমাত্রা খুব কমই +10 ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে, আবার মাঝে মাঝে শূন্যেও নেমে যায়। শীতকালে গ্রিনল্যান্ডে তাপমাত্রা -10 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। উল্লেখযোগ্যভাবে, দ্বীপটির কেন্দ্রীয় অঞ্চল স্থায়ী বরফে আচ্ছাদিত থাকে।

রাশিয়া

বৈচিত্র্যময় জলবায়ুসম্পন্ন বিশাল দেশ রাশিয়ার কিছু অঞ্চল বিশ্বের শীতলতম বলে বিবেচিত হয়, বিশেষত সুদূর উত্তর, আর্কটিক এবং উত্তর সাইবেরিয়ান অঞ্চলগুলো। "সাইবেরিয়ান ফ্রস্ট" শব্দটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত, কারণ এই অঞ্চলে খুব কমই গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া অনুভব করা যায় এবং এখানকার জীবনযাপনের অবস্থাও অত্যন্ত কঠোর। রাশিকার উত্তর উপকূলরেখার তাপমাত্রা -70 ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। 1938 সালে, অয়মিয়াকন গ্রামে -71.2°C তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। রাশিয়া জুড়ে অনেক অঞ্চল ভারী তুষারপাত এবং তীব্র ঠান্ডা সহ উল্লেখযোগ্য শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে, কিছু শহরে তাপমাত্রা -60 থেকে -70 ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইয়াকুটিয়াতে -55 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচিত হয়।

কানাডা

কানাডার জলবায়ু অনেকভাবেই রাশিয়ার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল আর্কটিক সার্কেলের উত্তরে অবস্থিত, যেখানে তীব্র ঠান্ডা বিরাজ করে এবং শক্তিশালী শীতল বাতাস বয়ে যায়। কানাডার কিছু অংশে তাপমাত্রা -45 ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে এবং দেশটির গড় শীতকালীন তাপমাত্রা প্রায় -39 ডিগ্রি সেলসিয়াস। কানাডায় ভারী তুষারপাত হয় এবং সেখানে তুষার গভীরতা প্রায়শই মানুষের উচ্চতায় পৌঁছায়। উদাহরণস্বরূপ, কুইবেকে শীতকালে 3.3 মিটার পর্যন্ত তুষারপাত হতে পারে। কানাডায় আর্কটিক বায়ুর বয়ে যায় এবং উপকূল বরাবর সাব-আর্কটিক বায়ু তীব্র ঠান্ডা নিয়ে আসে। শীতকালে, পূর্ব উপকূল তুষারে আচ্ছাদিত হয়েছে এবং প্রায়ই তাপমাত্রা -40 ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়।

ফিনল্যান্ড

উত্তর ইউরোপের এই দেশটিতেও তীব্র শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে, বিশেষ করে শীতকালে। শীতকালে ফিনল্যান্ডে ছয় ঘন্টা সূর্যের দেখা পাওয়া যায় এবং বেশিরভাগ মৌসুমে তুষার আচ্ছাদিত থাকে। ফিনল্যান্ডের শহরগুলোতে তাপমাত্রা -25 ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে, যখন সান্তা ক্লজের আবাসস্থল ল্যাপল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে অত্যন্ত শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে। 1999 সালে, ল্যাপল্যান্ডে তাপমাত্রা -51 ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছিল। ফিনল্যান্ডে তুষার প্রায় বছরের অর্ধেক সময় পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং শীতের তাপমাত্রা প্রায়শই -25 ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে -27 ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে।

আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ড এই তালিকার সর্বশেষ অবস্থানে রয়েছে। "বরফের দেশ" হিসাবে পরিচিত দেশটি প্রকৃতপক্ষেই বরফ দ্বারা আচ্ছাদিত থাকা এবং সেখানে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না বললেই চলে, যা ঠান্ডাকে আরও তীব্র করে তোলে। দেশটিতে শীতের তাপমাত্রা প্রায়শই -30 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, যখন পর্বত উপত্যকায় গ্রীষ্মের তাপমাত্রা খুব কমই 0 ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে। উত্তর আইসল্যান্ডে, শীতের গড় তাপমাত্রা -10 ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে বাড়ে না, যা রেকর্ড সর্বনিম্ন একবারে -40 ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়। যেকোন ঋতু নির্বিশেষে, দেশটির পাহাড়ী অঞ্চলগুলোতে সর্বদা নিম্নভূমির তুলনায় বেশি ঠান্ডা বিরাজ করে।